ফ্রি ওয়াই–ফাই ব্যবহারে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

সেলুন থেকে ব্যায়ামাগার কিংবা রেস্তোরাঁ থেকে রেলস্টেশন—আজকাল এমন প্রায় সব জায়গাতেই ওয়াই-ফাই সুবিধা উন্মুক্ত রাখা হয় সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য। অনেকে তো গ্রাহক আকর্ষণের জন্য দোকানে বড় বড় হরফে লিখে রাখেন, ‘ফ্রি ওয়াই-ফাই’। তবে বিনা মূল্যে সরবরাহকৃত এই ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট কখনো সাইবার অপরাধের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। চুরি হয়ে যেতে পারে ফোন বা কম্পিউটারের গোপন তথ্য। তাই উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই ব্যবহারের আগে কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।

সফটওয়্যার হালনাগাদ রাখুন

স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম শুধু নতুন সুবিধা দিতেই হালনাগাদ হয় এমনটি কিন্তু নয়। আপনার ফোনটিকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতেও উন্নত সংস্করণ হালনাগাদ করা হয়। তাই প্রায়ই যাঁরা উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই ব্যবহার করেন তাঁদের ডিভাইসগুলো সব সময় আপ-টু-ডেট রাখুন।

অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন

উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই ব্যবহারে তথ্য চুরি হওয়ার পাশাপাশি স্মার্টফোনে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ারও আশঙ্কা থাকে। তবে সেদিক থেকে আইফোন ব্যবহারকারীরা কিছুটা নিরাপদ হলেও অ্যানন্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাই আপনার ফোনে অ্যান্টিভাইরাস টুল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন বিভিন্ন অ্যাপ। তবে সেগুলো অবশ্যই ভালো মানের ডেভলপারের তৈরি হতে হবে।

ধীরগতির ওয়াই-ফাই থেকে সাবধান

জনাকীর্ণ স্থানে উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই ধীরগতির হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে কম ব্যবহারকারী থাকা সত্ত্বেও যদি সংযোগটি খুবই ধীরগতির হয় তবে সাবধান! ওয়াই-ফাই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাই শ্রেয়। কেননা, আপনার তথ্য সাইবার অপরাধীর কাছে পাচার হচ্ছে, ধীরগতির ওয়াই-ফাই সংযোগ তার একটা লক্ষণ।

কেনাকাটা থেকে বিরত থাকুন

উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই সংযোগে আপনার ডিভাইস দিয়ে যে কাজটি মোটেও করা উচিত নয়, তা হলো অনলাইনে কেনাকাটা বা ব্যাংকিং করা। অর্থাৎ আপনার অনলাইনে আর্থিক লেনদেন তথ্যবহুল কাজ কখনোই উন্মুক্ত ওয়াই-ফাইয়ে করা উচিত হবে না। সাইবার অপরাধ বিশ্লেষকেরা বলছেন, বেশির ভাগ অনলাইন ব্যাংকিং জালিয়াতি সংগঠিত হয় উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই ব্যবহার করে অনিরাপদ আর্থিক লেনদেনের জন্য।

টু ফ্যাক্টর নিরাপত্তা ব্যবহার করুন

আজকাল বেশির ভাগ ওয়েবসাইট বা ই-মেইলে লগ ইন করতে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন পদ্ধতির প্রচলন রয়েছে। এই সুবিধার মাধ্যমে আপনার ই-মেইল বা পাসওয়ার্ড চুরি হয়ে গেলেও মোবাইলে নির্দিষ্ট কোড ছাড়া লগ ইন করা যাবে না। উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই হরহামেশাই যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট বা ই-মেইলে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত।

প্রয়োজন শেষে দ্রুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন

জরুরি প্রয়োজনে উন্মুক্ত ওয়াইফাই ব্যবহার করার প্রয়োজন হতেই পারে। তবে আপনার উচিত কাজ শেষে সঙ্গে সঙ্গেই সেই সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া।

ভিপিএন ব্যবহার করুন

নিরাপদে উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায় হলো ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন ব্যবহার করা। ভিপিএন ব্যবহারকারীর তথ্য যতটা সম্ভব নিরাপত্তার সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে আদান-প্রদান করে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন, উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সময় ভিপিএন চালু রাখুন। লিখেছেন: শাওন খান, সূত্র: গ্যাজেটস নাও।

NOTICE

Scroll to Top