অনলাইনে নিরাপদ থাকতে যা করবেন

সব ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে ব্যবহারের আগে জানতে হবে কিভাবে ইন্টারনেটে নিরাপদ থাকা যায়। শিক্ষামূলক ও সামাজিক যোগাযোগে বিভিন্নভাবে সব বয়সী শিশুদের সাহায্য করে ইন্টারনেট। কিন্তু সতর্কতার অভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে যে কেউ।

তথ্য শেয়ারে সতর্কতা

\"Image

১. অপরিচিত মেসেজ এড়িয়ে চলা: যেভাবে রাস্তায় চলাফেরার সময় অপরিচিত ব্যক্তিদের সাথে কথা বলা উচিত নয় তেমনি অনলাইনেও সমান। কারণ যার সঙ্গে কথা বলবেন সে মিথ্যা পরিচয় ধারণকারী বিপজ্জনক হতে পারে।

★ যদি কথা বলতেই হয়, তবে সাবধান! নিজের ঠিকানা, বয়স, স্কুল, শ্রেণী, পেশা ইত্যাদি বলা যাবেনা।

\"Image

২. অপরিচিত কারো সঙ্গে সাক্ষাতে সতর্কতা: অনলাইনে কারো সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠলে এবং তিনি বিশ্বাসযোগ্য কেউ হলেও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। প্রথমত মা-বাবার অনুমতি নিতে হবে দেখা করার আগে এবং পারলে কাউকে সঙ্গে নেয়া ভালো। আর সাক্ষাত অবশ্যই মানুষের উপস্থিতি আছে, এমন খোলামেলা কোনো জায়গায় হওয়া উচিত। এতে সন্দেহজনক কিছু ঘটলেও পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে পড়বে সহজে।

\"Image

৩. প্রাইভেট ফোরাম ও চ্যাট রুমের বিষয়ে সতর্কতা: ফোরামে প্রবেশ মানেই নিজের ব্যক্তিগত ই-মেইল ও ঠিকানা অন্য কেউ জেনে ফেলা। এতে আপনার অবস্থান খুঁজে বের করা খুবই সহজ হয়ে যায়। দুর্ভাগ্যবশত এসব চ্যাটরুমে বড়রা প্রায়শই থাকে কম বয়সীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য।

\"Image

৪. ডেটিং সাইট এড়িয়ে চলা: যদি টিনেজার হয়েও ডেটিংয়ের ইচ্ছা থাকে, তবে পরিচিত কারো সঙ্গে করুন। ডেটিং সাইটগুলো বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। এখানে আপনি জানতে পারেন না যে, কার সঙ্গে কথা বলছেন। বয়স্করাও স্বার্থের জন্য টিনেজার সাজে এখানে।

\"Image

৫. সামাজিক মাধ্যমে সবার অনুরোধ গ্রহণ না করা: যদি সামাজিক মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট থাকে যেমন: ফেসবুক, টুইটার, স্কাইপ- তবে অপরিচিত কারো অনুরোধ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা ভালো। এক্ষেত্রে ভুয়া আইডি হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। সাইবার অপরাধীরা আপনাকে বিভিন্নভাবে প্রলুদ্ধ করবে তাদের সঙ্গে কথা বলতে। শুধু পরিচিতদের ফ্রেন্ড/ফলোয়ার লিস্টে রাখুন।

 

সুরক্ষা

\"Image

১. শক্ত/কঠিন পাসওয়ার্ড: পাসওয়ার্ড কখনোই ব্যক্তিগত কোনো কিছুর নামে যেমন: পোষাপ্রাণী, প্রিয়গান হওয়া উচিত নয়। সাধারনত শব্দ ও সংখ্যার সমন্বয়ে হওয়া উচিত। প্রত্যেক আলাদা সাইটে আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।

\"Image

২. সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্টে প্রাইভেসি: যাতে আপনার বন্ধুরা ছাড়া অন্যরা আপনার শেয়ার করা কন্টেন্ট দেখতে না পারে সেজন্য প্রাইভেসি সেটিংসে ‘ফ্রেন্ড’ করে রাখুন। যদি ‘পাবলিক’ করে দেয়া থাকে তাহলে যে কেউ আপনার সম্পর্কে জেনে যাবে এবং তথ্যের অপব্যবহার করবে।

\"Image

৩. একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য না দেয়া: অনলাইনে নিজের ফোন নম্বর, ঠিকানা দেয়া উচিত নয়।  পরিবারের কারো তথ্যও দেবেন না।

\"Image

৪. ব্যক্তিগত ছবি শেয়ার না করা: যেমন যদি স্কুলের শার্ট পরে ছবি শেয়ার করেন, তবে যে কারো পক্ষে আপনার তথ্য জানা সহজ হয়ে যাবে। যদি কেউ অনলাইনে আপনার ছবি পেতে চায়, সরাসরি ‘না’ বলে দিন।

\"Image

. অন্যের কম্পিউটারে ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে কাজ নয়: নিজের কম্পিউটার ছাড়া আপনি যদি আপনার বন্ধুর বা পরিচিত অন্য কারো কম্পিউটার ব্যবহার করেন, তাহলে সেখানে যেকোনও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট (যেমন: অনলাইন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট ইত্যাদি) লগইন করবেন না। নিজের একান্ত ব্যক্তিগত ডিভাইস ছাড়া অন্য কোথাও ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে কাজ করা উচিত নয়।

\"Image

৬. অর্থ সম্পর্কিত বিষয়ের গোপনীয়তা: টাকা, ব্যাংকের চেক, ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদির ছবি শেয়ার করবেন না।

\"Image

৭. লোকেশন অফ রাখুন: কিছু আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন ফোনে লোকেশন দেয়া থাকে, যা চালু করা থাকলে আপনার শেয়ার করা কন্টেন্টে লোকেশন দেয়া থাকে। এর মাধ্যমে যে কারো পক্ষে আপনাকে ফলো করা সহজ।

\"Image

. স্প্যাম খুলবেন না: বিজ্ঞাপন, প্রতারণা এবং ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে স্প্যাম হয়। মোটা অংকের টাকা অথবা আকর্ষণীয় পুরস্কার জেতার লোভ দেখিয়ে ইমেইলের মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হয়। এগুলোকেই স্প্যাম বলে।     

ধরুন আপনার নাম উল্লেখ করে কেউ অনলাইনে কেউ আপনাকে ‘Hi’ লিখলো। কিন্তু আপনি বাস্তবে তাকে চেনেন না। এমন প্রতারকরা আপনার ইমেইল ঠিকানার মাধ্যমেও আপনার নাম জানতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।

অপরিচিত কোনো ঠিকানা থেকে ইমেইল পেলে সেটি খুলে দেখা ‍উচিত নয়। এমন ইমেলে ‘এখানে ক্লিক করুন’ এই ধরনের কিছু লেখা থাকলে বা আকর্ষণীয় কোনো কিছুর কথা বলা হলে সেখানে ক্লিক করা উচিত নয়। কারণ এগুলোতে একটি ক্লিকেই ভাইরাস বা ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে আপনার কম্পিউটারের বারোটা বেজে যেতে পারে!

\"Image

৯. নির্ভরযোগ্য কেনাকাটার ওয়েবসাইট ব্যবহার: প্রায়শই অনলাইন শপগুলো পণ্য বিক্রির জন্য প্রচার চালায়। শুধু বিশ্বস্ত সাইটগুলো থেকেই পন্য কিনুন।

\"Image

১০. এন্টি ভাইরাস আপডেট রাখুন: এটি আপনার কম্পিউটারকে ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখবে। ভাইরাস ও ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি অথবা কম্পিউটারের কোনো ক্ষতি করতে পারে।

রিপোর্টিং

\"Image

১. বিরক্তিকর ব্যক্তি দেখলে রিপোর্ট করা: যদি অনলাইনে কেউ আপনাকে বিরক্ত করে, যেমন ফোন নাম্বার, ছবি, মেইল চায় তাহলে তা পরিচিত কাউকে জানিয়ে রাখুন।

২. রিপোর্ট বাটন ব্যবহার: কারো শেয়ার করা কিছু যদি আপনার খারাপ মনে হয় তবে তার জন্য সংশ্লিষ্ট সাইটের রিপোর্ট বাটন ব্যবহার করুন। এর ফলে কে আপনার সঙ্গে কী ধরনের খারাপ আচরণ করছে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে পারবে।

৩. সাইবার বুলিং প্রতিরোধ: অনেক মানুষ আজকাল সাইবার বুলিং বা অনলাইনে নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অসচেতনতাই এর বড় কারণ। তাই সচেতন হোন। প্রত্যেক পদক্ষেপে চিন্তা করুন এর প্রতিফল কী হতে পারে।

আসুন আমরা সচেতন হই, নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার করি।

NOTICE

Scroll to Top